১০টি শ্রেণিতে জমি বিন্যাস করে ‘ভূমি জোনিং ও সুরক্ষা আইন’ ২০২৪ চালু হচ্ছে
ভূমির অপরিকল্পিত ব্যবহার রোধ এবং সুরক্ষায় জমি ১০টি শ্রেণিতে বিন্যাস করে ‘ভূমি জোনিং ও সুরক্ষা আইন’ করা হচ্ছে।
অপরিকল্পিত নগরায়ন, আবাসন, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা ও রাস্তাঘাট নির্মাণ রোধ করে ভূমির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ‘ভূমি জোনিং ও সুরক্ষা আইন, ২০২৪’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ আইনের খসড়া চূড়ান্তকরণ বিষয়ক এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, কৃষিজমি শুধু শস্য উৎপাদন ক্ষেত্র নয়, কৃষিজমি আমাদের অর্থনীতির প্রাণ এবং আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার ভিত্তি।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দ্রুত শিল্পায়ন ও নগরায়নের দ্বারা সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের জন্য ভূমির মত এই অমূল্য সম্পদ রক্ষার জন্য শক্তিশালী আইন প্রণয়ন করা জরুরি বলে মনে করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই আইন স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন, বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং দীর্ঘমেয়াদি ব-দ্বীপ পরিকল্পনার সহজতর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এরই মধ্যে ভূমি জোনিং ও সুরক্ষা আইন ২০২৪ খসড়া প্রকাশিত হয়েছে। PDF দেখুন
প্রস্তাবিত ভূমি জোনিং ও সুরক্ষা আইনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ন, আবাসন, বাড়ি-ঘর তৈরি, উন্নয়নমূলক কার্যক্রম, শিল্প-কারখানা ও রাস্তাঘাট নির্মাণরোধ করা; ভূমির শ্রেণি বা প্রকৃতি ধরে রেখে পরিবেশ রক্ষা ও খাদ্য শস্য উৎপাদন অব্যাহত রাখা; কৃষিজমি, বনভূমি, টিলা, পাহাড়, নদী, খালবিল ও জলাশয় সুরক্ষাসহ ভূমির পরিকল্পিত ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা; এবং ভূমির ব্যবহার নিশ্চিত করে পরিকল্পিত জোনিংয়ের মাধ্যমে ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহারে রাষ্ট্রীয় অনুশাসন নিশ্চিত করা।
নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, যেহেতু আইনটি প্রণয়ন হলে প্রায় সব খাতে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, আমরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মূল্যবান মতামত আহ্বান করছি। আমি আশা করছি সবার প্রাপ্ত মতামতের ওপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত আইনের খসড়াটি কৃষি সমৃদ্ধিকে উৎসাহিত, খাদ্য সুরক্ষা জোরদার এবং আমাদের পরিবেশকে সুরক্ষিত করায় ভূমিকা রাখবে।
ভূমি সচিব জানান, এ আইনের মূল বিধানগুলোর মধ্যে রয়েছে ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, ভূসংস্থান এবং উদ্দিষ্ট ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে জমিকে স্বতন্ত্র অঞ্চলে নিখুঁতভাবে শ্রেণিবদ্ধ করা। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং স্থল মূল্যায়নের মাধ্যমে, সরকার ডিজিটাল ল্যান্ড জোনিং ম্যাপ তৈরি করছে, যা সারাদেশে পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য একটি স্পষ্ট প্রতিচিত্র প্রদান করবে। ল্যান্ড জোনিং ম্যাপ তৈরি সংশ্লিষ্ট ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় চলমান প্রকল্পটির নাম ‘মৌজা ও প্লটভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং প্রকল্প’।
বিশেষজ্ঞসহ সবার মতামতের ওপর ভিত্তি করে আইনের খসড়ায় ভূমি জোনিংয়ের জন্য ১০টি শ্রেণিবিন্যাসের প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, আবাদি, আবাসিক, বাণিজ্যিক, জলাভূমি, নদী, বন, পাহাড়, রাস্তা, শিল্প এবং ধর্মীয় স্থান।